নিজস্ব প্রতিবেদক:
বুধবার ১২ই ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঢাকার তিনটি আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আইয়ামে জাহেলিয়াত নামে একটা কথা আছে। গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বক্ষেত্রে- আয়নাঘর তার একটা নমুনা।। ড. ইউনূস আরও বলেন, মানুষের মনুষ্যত্ববোধ বলতে গিয়ে কিছু আছে, সেটা থেকে বহু গভীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিশ্চিহ্ন করার জন্য। যাতে মানুষের মনুষ্যত্ববোধ না থাকে। প্রতিটি জিনিস এখানে যা হয়েছে নৃশংস, যতটা শুনে অবিশ্বাস্য মনে হয় এটা কী আমাদেরই জগৎ? এটা আমাদেরই সমাজ? আমরাই এটা করলাম?
প্রধান উপদেষ্টা এও বলেন, যারা এটার শিকার হয়েছে তারা আমাদের সঙ্গে আছেন, তাদের মুখে শুনলাম কীভাবে হয়েছে। কোনো ব্যাখ্যা নাই। এটা বিনা কারণে। বিনা দোষে। কতগুলো সাক্ষী ঢুকিয়ে দিয়ে বলছে যে তুমি জঙ্গি। এগুলো বলে বলে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এরকম টর্চার সেল সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে। আমার ধারণা ছিল শুধু এখানে আয়না ঘর বলতে কয়েকটা আছে। এখন শুনতেছি আয়না ঘড়ের বিভিন্ন ভার্সন সারাদেশজুড়ে আছে। কেউ বলে ৭শ, কেউ বলে ৮শ। সে সংখ্যাটা এখনো নিরূপণ করা যায়নি, কতটা জানা আছে, কতটা অজানা রয়েছে।
বন্দিশালা ঘুরে দেখে অধ্যাপক ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, বীভৎস দৃশ্য। নৃশংস জিনিস হয়েছে এখানে। তিনি বলেন, ‘যতটাই শুনি মনে হয়, অবিশ্বাস্য, এটা কি আমাদেরই জগৎ, আমাদের সমাজ? যারা নিগৃহীত হয়েছেন, তারাও আমাদের সমাজেই আছেন। তাদের মুখ থেকে শুনলাম। কী হয়েছে, কোনো ব্যাখ্যা নেই।’
মানুষকে সামান্যতম মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড: ইউনুস আরও বলেন বছরের পর বছর এভাবে রাখা হয়েছে।’সমাজকে এসব থেকে বের করে না আনা গেলে সমাজ টিকবে না বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি নতুন সমাজ গড়া, অপরাধীদের বিচার করা, প্রমাণ রক্ষার ওপর জোর দেন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ন্যায়বিচার যেন পায়, সেটা এখন প্রাধান্য।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম প্রমুখ®
Leave a Reply